স্মার্টফোনের আসক্তি দিনে দিনে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। স্মার্টফোনের আসক্তি থেকে বাঁচতে ৭টি কাজ করুন তাহলে এই সমস্যা থেকে আপনি কিছুটা মুক্ত থাকতে পারবেন। এই অভ্যাসগুলো আপনার ক্রিয়েটিভিটি এবং প্রোডাক্টিভিটি অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলবে।
আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় স্মার্টফোন ব্যবহার করা ছাড়া আপনি কি একটি দিন সম্পূর্ণ শেষ করতে পারবেন? তাহলে হয়তো এই মুহূর্তে আপনি বলবেন এটা কিভাবে সম্ভব। কারণ স্মার্টফোনের নিত্য নতুন ফিচার এবং সুবিধার কারণে আমরা প্রতিদিনই এই ডিভাইস ব্যবহারে এত বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছি যা আমাদের সামাজিক, আর্থিক এবং ক্রিয়েটিভিটি বৃদ্ধিতে যথেষ্ট বাধাগ্রস্ত করছে।
Contents
স্মার্টফোনের আসক্তি
প্রয়োজন এর চেয়ে বেশি কাজে এবং অকাজে স্মার্টফোন ব্যবহার করাকেই আমরা স্মার্টফোন আসক্তি বলতে পারি। প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে স্মার্ট ফোন আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বিনা প্রয়োজনে স্মার্টফোন ব্যবহার এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে যা আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
করোনা পরবর্তী সময়ে এই সমস্যাটি আরো অনেক বেশি প্রকট আকার ধারণ করেছে কারণ এই সময় মানুষের মাঝে স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল।
স্মার্টফোনের আসক্তি মানুষের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক বেশি ক্ষতিসাধন করে যা থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে আজকে আমাদের এই টিপস।
স্মার্টফোন ব্যবহারের নির্ধারিত সময়
স্মার্টফোন আমাদের নিয়মিত কাজে লাগলেও আমাদের এটি ব্যবহারের জন্য একটি নির্ধারিত সময় নির্ধারণ করা উচিত। কখন কত মিনিট এই ডিভাইসটি আমরা ব্যবহার করব তার নির্ধারণ করে নিলে আস্তে আস্তে এর আসক্তি আমাদের থেকে দূরে সরে যাবে।
এতে কাজে মনোনিবেশ করা যাবে এবং মানসিক ও শারীরিকভাবে স্বস্তি পাওয়া যাবে। স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করতে গিয়ে আপনি সকালে আধা ঘন্টা, দুপুরে ১৫ মিনিট এবং রাতে তিরিশ মিনিট ব্যবহারের জন্য ধার্য করতে পারেন।
স্মার্টফোন ব্যবহারের মনিটরিং
আমরা মনের অজান্তেই আমাদের হাতে থাকা ডিভাইসটি সারাক্ষণ স্ক্রল করতে থাকি। মজাদার বিভিন্ন কনটেন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়া স্কুল করতে করতে কখন যে সময় বয়ে যায় সেটি আমাদের মনে থাকে না।
তাই আপনার হাতে থাকায় স্মার্টফোনটি ব্যবহার এর ক্ষেত্রে কোন একটি কত মিনিট ব্যবহার করছেন তা মনিটরিং করুন এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে সেগুলো ব্যবহারের সময় কমিয়ে আনুন।
এই অভ্যেসটি ধীরে ধীরে আয়ত্ত করতে পারলে আপনার স্মার্ট ফোন আসক্তি কমে আসবে।
দিনের কিছুটা সময় স্মার্টফোন বন্ধ রাখা
স্মার্টফোনের আসক্তি কমানোর জন্য দিনের কিছুটা সময় আপনার ডিভাইসটি বন্ধ করে রাখুন। এতে আপনি মানসিক শক্তি পাবেন এবং স্মার্টফোনের আসক্তি কমে আসবে।
এটি নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে আপনি সকালে দুই ঘন্টা অথবা বিকালে তিন ঘন্টা অথবা রাতে ঘুমানোর সময় কি স্মার্ট ফোন বন্ধ করে রাখতে পারেন।
এতে আপনার ফোনের প্রতি আসক্তি কমার সাথে সাথে মোবাইলটিও কিছুটা সময় আরাম পাবে এবং ব্যাটারি লাইফ স্ট্রং হবে। ফোনের ব্যাটারি ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই পদ্ধতিটি কিছুটা কার্যকরী।
নোটিফিকেশন অফ বা লিমিটেড করে রাখা
স্মার্টফোনের নোটিফিকেশন বেজে ওঠার সাথে সাথেই আমরা সকল কাজ ফেলে এর দিকে ছুটে যাই। স্মার্টফোনে আসক্তি কমার গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে নোটিফিকেশন অফ করে রাখা বা লিমিটেড করে রাখা অন্যতম।
আপনার ফোনে নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখলে কাজের সময় অবাধিত শব্দ আপনার মনোযোগ বিঘ্নিত হবে না আপনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যেতে পারবেন। এভাবে আস্তে আস্তে আপনার স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি কমে আসবে।
সম্ভব হলে সবগুলো অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখবেন এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ ছাড়া নোটিফিকেশন চালু রাখবেন না। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ গুলো এবং ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ গুলোর নোটিফিকেশন বন্ধ রাখাই উচিত।
ফোনের ডাটা অফ রাখা
মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে বাঁচতে একটি অন্যতম কাজ হচ্ছে প্রয়োজন শেষে মোবাইলের ডাটা অফ করে দেয়া। এতে স্মার্টফোনের অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন অথবা ব্যাকগ্রাউন্ডে আপনার ডাটা নষ্ট হবে না।
এই কাজটি করতে পারলে আপনার মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি এবং আর্থিক সাশ্রয় দুটোই পাওয়া যাবে।
পড়ার সময় স্মার্টফোন জমা রাখা
পড়তে বসার সময় অবশ্যই একজন ছাত্র-ছাত্রীকে তার পড়ায় মোবাইল ফোনটি বন্ধ রাখুন। আপনার কাছে রাখলে এটি যদি বন্ধ রাখা সম্ভব না হয় তাহলে আপনার এমন কারও কাছে রাখুন যিনি আপনি চাইলেও ফোন আপনাকে দেবেনা।
হতে পারে আপনি এটি আপনার মা, বাবা অথবা পরিবারের এমন কারও কাছে রাখলেন যার কাছে আপনি সহজে চাইতে পারবেন না।
প্রিয় পাঠক, আমি বিশ্বাস করি আপনি উপরোক্ত নিয়মগুলো অনুসরণ করে ধীরে ধীরে স্মার্টফোন থেকে আপনার আসক্তি কমিয়ে আনতে পারবেন।
2 Comments
Pingback: টাকা কি এবং কিভাবে কাজ করে - Fabush
Pingback: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য IMS মডিউলে হালনাগাদ করার নির্দেশ - Fabush